আগস্টের মাঝামাঝি হুট করেই কম্পিউটার তৈরি বন্ধের ঘোষনা
দিয়েছিল বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ কম্পিউটার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হিউলেট
প্যাকার্ড বা এইচপি। ঘোষনা অনুযায়ী, এইচপি-র কম্পিউটার তৈরির বিভাগটি বন্ধ
করে কেবল সফটওয়্যার তৈরির ব্যবসায়-ই করার কথা। এ ঘোষনার পরপরইে বিশ্বব্যাপী বিষয়টি ব্যাপক আলোড়ন তুলেছিল। শেয়ার বাজারে যেমন এইচপি-র শেয়ারের ব্যাপক দরপতন হয়েছিল তেমনি মূল্য পতন ঘটেছিল এইচপি-র প্রযুক্তি পণ্যেরও।
যারা
এ সংক্রান্ত আপডেট আগে মিস করেছেন তাদের জন্য একটু বলে নেয়া ভালো। এইচপি
অনেক বড় প্রতিষ্ঠান, আর তাদের ব্যবস্থাপনা সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি
বিভিন্ন ইউনিটে বিভক্ত হবে এবং এর ক্ষমতা বিকেন্দ্রীভূত। এর অনেকগুলো
বিভাগের মধ্যে পার্সোনাল সিস্টেমস গ্রুপ বা পিএসজি অন্যতম একটি ইউনিট।
মূলত, পার্সোনাল সিস্টেমস গ্রুপ এইচপি-র কম্পিউটার তৈরির সঙ্গে সম্পৃক্ত
বিভাগ। কম্পিউটার তৈরি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়ায় তাই পার্সোনাল সিস্টেমস
গ্রুপ কে এইচপি থেকে আলাদা করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সেসময়। মানে
পিএসজিকে আর এইচপির সঙ্গে রাখা হবেনা, একই সঙ্গে তাই এইচপির কম্পিউটার
তৈরিও বন্ধ করে দেয়া হবে।
তবে দেরিতে হলেও, আগস্টে প্রতিষ্ঠানটির গৃহিত সিদ্ধান্তে আবারও পরিবর্তণ
আনা হয়েছে। এইচপি-র পার্সোনাল সিস্টেমস গ্রুপ বা পিএসজি-র অধীনে
প্রতিষ্ঠানটি কম্পিউটার তৈরি অব্যাহত রাখার ঘোষনা দিয়েছে। এইচপির
পূর্ববর্তী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লিও অ্যাপটেকার-ই মূলত কম্পিউটারটি
ব্যবসাটি বন্ধের ঘোষনা দেন। ধারণা করা হয়, অ্যাপটেকারের এই ঘোষনা এইচপি
পরিচালণা পরিষদের পছন্দ হয়নি। আর এ কারণেই বছর ঘুরতে না ঘুরতেই তাকে এইচপি
থেকে বের করে দেয়া হয়। এরপর তার স্থলাভিষিক্ত হয়ে নিয়োগ পান মেগ হুইটম্যান।
তিনিই আমার এইচপির কম্পিউটার তৈরির বিভাগটি চালু রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন।
২৭ অক্টোবর প্রতিষ্ঠানটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এইচপি-র বর্তমান প্রধান
নির্বাহী মেগ হুইটম্যান জানান, ‘আমরা এইচপির অর্থনৈতিক, রণকৌশল এবং কার্যগত
দিকগুলো বাস্তবতার নিরিখে অনেক বিশ্লেষণ করেছি। এটা এখন আমাদের কাছে
পরিষ্কার যে পিএসজিকে এইচপি-র সঙ্গে যুক্ত রাখা ক্রেতা, অংশীদার,
শেয়ারহোল্ডার এবং কর্মকর্তাদের অধিকারে পরিণত হয়েছে এবং এটি আমাদের করতেই
হবে। আমরা এখন একসঙ্গে একে অপরকে আরোও শক্তিশালী করতে বদ্ধপরিকর।’
প্রতিষ্ঠানটির এক সাম্প্রতিক বিশ্লেষণ প্রতিবেদন অনুযায়ী, এইচপি থেকে
এইচপি পার্সোনাল সিস্টেমস গ্রুপ বা পিএইচজিকে আলাদা করে ফেললে এর
ব্র্যান্ড ভ্যালু তে যেমন নেতিবাচক প্রভাব পড়বে তেমনি এইচপির মুনাফাও
নেতিবাচক ধারার দিতে যাবে। এজন্য পার্সোনাল সিস্টেমস গ্রুপকে এইচপির
সঙ্গেই রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এইচপি পরিচালনা পরিষদ।
এইচপি পিএসজি-র নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট টড ব্র্যাডলি জানান, এইচপির
অংশ হিসাবেই আমরা ক্রেদাতের নতুন সব প্রযুক্তি পণ্য উপহার দিতে পারবো বলেই
আমাদের বিশ্বাস। এইচপির কম্পিউটার তৈরির বিভাগটি নতুন সব উদ্ভাবনে আরোও
বেশি মনোযোগী হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এইচপির ইউনিট হিসাবে পার্সোনাল সিস্টেমস গ্রুপের ব্যবসায়িক ইতিহাস বেশ
উজ্জল। ২০১০ অর্থনৈতিক বছরে এটি ৪০.৭ বিলিয়নেরও বেশি মুনাফা অর্জন করে।