সবাইকে সালাম ও শ্রদ্ধা জানিয়ে আমার আজকের পোস্ট শুরু করছি।
আজকের বিষয় পেনড্রাইভ।
পেনড্রাইভ আমাদের কাছে অতি পরিচিত একটি নাম। এবং বহু ব্যবহার্য একটা প্রযুক্তি মাধ্যম। আজকাল অনেকের কম্পিউটার না থাকতে পারে কিন্তু একটা পেন্ড্রাইভ তার চাইয়ি চাই।
পেনড্রাইভ মূলত, আমরা এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে তথ্য বিনিময় করার জন্য ব্যবহার করে থাকি। এমনকি, তথ্য বহন, সংরক্ষণ সহ অনেক কাজের কাজী এই পেনড্রাইভ। পেনড্রাইভের আর একটি জনপ্রিয় নাম হলো ডাটা ট্রাভেলার।
অনেক দিন আগে আমি একটা ২৫৬ মেগা বাইটের পেনড্রাইভ কিনেছিলাম। যা এখনো টিকে আছে, মজার ব্যাপার হলো, আপনি এখন বাজার ঘুরে ১ গিগার পেনড্রাইভ পাবেন কিনা সন্দেহ। ১ গিগা = ১০২৪ মেগাবাইট।
পেনড্রাইভ সাধারণত নষ্ট হয় না। এটা একটা মজবুত ডিভাইস। কারণ, এটি খোলার কোন ব্যবস্থা নাই। এমনকি, এতে স্থায়ী একটা মেমোরী ডিভাইস থাকে তবে, দামের হের ফেরের উপর ডিভাইসটির কোয়ালিটি নির্ভর করে।
অনেকেই বলবেন, কি বলেন ভাই, আমার পেনড্রাইভ তো হিউজ ঝামেলা করে। এই তো নষ্ট হয়ে গেলো সেদিন। আপনাদের উদ্দেশ্যে বলি, এটাতে কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত করার যে স্টিলনেস স্টিলের ক্যাবল পার্ট থাকে তা অতি ব্যবহারের ফলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আর ভাইরাস তো পেনড্রাইভের জম।
বাজারে প্রায় সব পেনড্রাইভের লাইফ টাইম ওয়ারেন্টি থাকে। তাতেই, ভাববেন না যে ১০ বছর পর পেনড্রাইভ নষ্ট হলেও নতুন পেনড্রাইভ নিয়ে আসবো।
আসল ব্যাপার হলো, লাইফ টাইম জিনিসের মেয়াদ কাল আসলে ততদিন পর্যন্ত, যতদিন ওই পণ্য বাজারে থাকবে। এখন ধরেন আমার ২৫৬ মেগাবাইটের পেনড্রাইভ টা নষ্ট হয়ে গেল। আমি কি এখন ওই দোকানে গিয়ে ২৫৬ মেগাবাইটের পেনড্রাইভ পেতে পারবো? না তা সম্ভব না। তাই, মূলত এর মেয়াদকাল শেষ। এখন নষ্টটা বেচে কটকটি খাওয়া যেতে পারে।
অনেকেই ভাবছেন, শিরোনামের সাথে কথার কোন মিল খুঁজে পাচ্ছি না। আসলে, এই টিপস্ এত ছোট যে, তাই একটা বিশাল ভূমিকার আবর্তন করে নিলাম।
এবার আসল কথায় আসুন।
আমাদের সাধের পেনড্রাইভ আসলে fat32 বা fat ফরম্যাটে থাকে। কিন্তু, আমরা যদি তার ফরম্যাট পরিবর্তন করে ntfs করে দেই তবে তা আমাদের বিশেষ কিছু সুবিধা দিবে।
আপনি ভাবছেন, বিশেষ সুবিধা নিশ্চই জায়গা বৃদ্ধি। কিন্তু, খেয়াল করুন ব্যপারটা এমন না। আপনার জায়গা বরং একটু কম দেখাবে ntfs ফরম্যাট করার পর। তাহলে??....
এখন ধরুন, ১০০ মেগাবাইটের একটা ভিডিও গান আপনি পেনড্রাইভে ভরেছেন। এখন পেনড্রাইভ আপনার ১০০ মেগাবাইট জায়গাই দখল করে নিবে। কিন্তু, আপনি যদি ntfs ফরম্যাটে ১০০ মেগাবাইট ঢুকান, তবে তা ৭০-৮০ মেগাবাইটের সমান জায়গা দখল করবে। তাহলে আপনি আগের চেয়ে অনেক বেশি পরিমান তথ্য পেনড্রাইভে ঢুকাতে সক্ষম হবে। তো হলো না, জায়গা বৃদ্ধি।
অনেকেই বলবেন যে, না কোন জায়গা বাড়ে না, কোন তথ্য কম জায়গা নেয় না। আসলে, আপনি হিসাব করে বের করতে পারবেন না। কিন্তু, সন্দেহ থাকলে একটা ছোট পরীক্ষা করে নিন।
প্রথমে fat বা fat32 থাকা কালীন পেনড্রাইভে তথ্য ভরে সম্পূর্ণ করে ফেলুন। এবার ওই পরিমান তথ্য কম্পিউটারের কোন ফোন্ডারে আলাদা করে সংরক্ষণ করুন। এবার পেনড্রাইভ কে ntfs ফরম্যাটে রুপান্তর করে নিন। এবার ওই সব তথ্য প্রবেশ করিয়ে দেখুন জায়গা খালি আছে নাকি নেই? থাকলে কতটুকু খালি আছে। নিজেই বুঝে যাবেন। আর, একটা কথা যার পেনড্রাইভের তথ্য সংরক্ষণের জায়গা যত বেশি, সে ntfs format থেকে তত বেশি সুবিধা ভোগ করবেন।
এবার, আগ্রহ থাকলে কাজটা করে নিন।
প্রথমে কম্পিউটারে পেনড্রাইভ কানেক্ট করে নিন। এবার মাই কম্পিউটার থেকে পেনড্রাইভের আইকনের উপর মাউসের রাইট বাটন ক্লিক করে format সিলেক্ট করুন।
নিচের চিত্র লক্ষ করে দেখুন।
এবার নতুন একটা উইনডো আসবে, এখন file system এ ক্লিক করে ntfs সিলেক্ট করে দিন এবং quick format এ টিক না থাকলে, টিক দিয়ে দিন। এবার, শুধু start এ ক্লিক করুন।
একটু পর আপনাকে ওয়্যানিং দিবে যে আপনার পেনড্রাইভের সব তথ্য মুছে যাবে। আপনি yes এ ক্লিক করে অপেক্ষা করুন। পেনড্রাইভ ntfs এ ফরম্যাট হয়ে যাবে। তবে, হ্যাঁ ফরম্যাট হয়ে গেলে একটা সিউরিটি উইন্ডো আসবে। আপনি ok করে দিন।
নিচের চিত্র একবার দেখুন।
একটা কথা মনে রাখবেন, আপনি যদি quick format সিলেক্ট না করেন, তবে কয়েক মিনিট থেকে পেনড্রাইভের জায়গা ভেদে কয়েক ঘন্টাও লাগতে পারে ফরম্যাট হতে। তাই, quick format এ টিক দেয়াই ভালো।
যদি কখনো মনে হয়, না!! রেজভী ব্যাটার বুদ্ধি ভালো না, আমার আগের অবস্থাই ভালো ছিলো। তাহলে, কি আর করা। একি কাজ, শুধু file format এ গিয়ে fat32 বা fat সিলেক্ট করে ফরম্যাট দিয়ে দিন।
বিঃ দ্র- আপনি যদি file format এ গিয়ে ntfs খুঁজে না পান, তবে জেনে রাখুন আপনার পেনড্রাইভের মধ্যে এই সুবিধা নাই, তাই যা আছে তাই নিয়েই সন্তুষ্ট থাকুন। তবে, ৯০ ভাগ পেনড্রাইভে এই সুবিধা থাকে।